এই তো এই গ্রীষ্মের কথা , মানে মার্কিন হিসাবে জুন থেকে অগাস্ট, স্কুল তিন মাসের ছুটি , আমি মেরিল্যান্ড থেকে কালিফোর্নিয়াতে | google map এ সারা পৃথিবী চষে বেড়াই, এই তো মাউস এ একটা ক্লিক আর আমি প্রশান্ত মহাসাগর এ , আর একটু এগোই তো মেক্সিকো | এভাবে কি আর কাজ করা যায় ? এমন হাতের নাগালে পাহাড় আর সমুদ্র এমন লোভ দেখাচ্ছে তো আমি কী কোরে আর ডেস্কএ বসে কেবল মাউস আর কিবোর্ড নিয়ে থাকি ! ছুটির দিন গুলোকে তো কাজে লাগাতেই হয়, সমুদ্র দর্শন এই গ্রীষ্মে নিয়মিতই হচ্ছে , তবে এখন পর্বতজয়ী হতে পারলাম না , কাজেই গন্তব্য এবার কলোরাডো | তারে আমি চোখে দেখিনি ( মানে ছবি দেখলেও তাতেও আর সত্যিকার দেখা না ) , তার অনেক গল্প শুনেছি ! রকি পর্বতমালা, আসছি এবার আমি :)
(এসটেস পার্ক, ফোর্ট কলিন্স : কলোরাডো | অগাস্ট , ১০ - ১২ , ২০১১ )
প্লেনের টিকেট কেটে ফেলার পর মনে হুল এক্ষনি এয়ারপোর্ট এ দৌড় দেই, উত্তেজনায় ঘুম ঠিকই হয়, কিন্তু অফিসের কাজে কোনো অগ্রগতি আর হয় না |
এসটেস পার্ক নামের একটা ছোট্ট শহর, সেখান থেকে বাস যায় পাহাড়ের উপর , তারপর যে যার মতন পাহাড়ে চড়ে | তিনটা ছোট ছোট লেকে ঘুরার পরিকল্পনা নিয়ে বেরিয়ে পরলাম | bear lake , nymph lake, dream lake . আর সেই সাথে ছবি তলা তো আছেই | কিন্তু যত শত সহস্র ছবিই তুলি না কেন, খোলা চোখে যা দেখি তা কেমেরায় বন্দী করা মনের অনভুতিকে অক্ষরে বন্দী করার মত এতটা দুঃসাধ্য না হলেও ততটা সহজ না আসলে | তার পরও স্মৃতিকে ধরে রাখার এই যন্ত্রটার প্রতি কৃতজ্ঞ না হয়ে পারি না | আজ এই পাহাড়ের উপর এই লেকের পারে বসে নিজেকে যতটা ভাগ্যবান মনে হচ্ছে , একদিন কে জানে এই সব ছবি দেখে দেখে হয়ত তূত্তায় মন খারাপ হবে, সুন্দর তো সব সময় এতটা নাগালের সীমায় থাকে না , ফেলে আসা সময় সব সময়েই অনেক বেশি মধুর মনে হয়, কাজেই বুদ্ধিমানের কাজ হলো বদে না থেকে আরো নতুন নতুন সুন্দর মুহুর্তের খোঁজে বেড়িয়ে পড়া | আর সেই সাথে আমার অধ হয় হাঁটার গতি আরেকটু বাড়াতে হবে, নইলে পুরোটা দেখার আগেই সুর্য ডুবে যাবে | এত উঁচুতে হেটে আমি একটু কাহিলই হয়ে গেলাম, তো এবার গাছের তলে বসে বসে পানি খাও আর লোকজন পর্যবেক্ষণ কর, এই আর কি ! একেবারে ২/৩ বচ্ছরের শিশু কাঁধে করে বাবা-মায়েরা পর্বতাভিজানে নেমে পড়েছে দেখে ভালো লাগলো, " বাড়ির বাইরে এক পা দিলেই সব শেষ " - পরিবেশে মানুষ, এসব দেখে অবাক লাগে খুব ! জীবনের অর্ধেক পার করেও নিজেকে শিশু মনে হয় :(
সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে, এবার মাটিতে নেমে আসার পালা | এসটেস এ অনেক দোকানপাট, প্রায় অধ ঘন্টা আমার বুদ্ধিমান ফোনের সাথে গবেষণা করে একটা কফিশপ বাছাই করলাম, ভিতরে ঢুকে বুঝলাম আধাঘন্টার গবেষণা নিস্ফল যায়নি, চমত্কার কফির সাথে চমত্কার দাবার বোর্ড, গুটি চেলেই সন্ধ্যাটা পার করে ফেলতাম আর কি, যদি না দোকানের মালিক দোকান বন্ধের তাগাদা না দিত :P
Bear Lake, Rocky Mountain National Park |
এসটেস পার্ক নামের একটা ছোট্ট শহর, সেখান থেকে বাস যায় পাহাড়ের উপর , তারপর যে যার মতন পাহাড়ে চড়ে | তিনটা ছোট ছোট লেকে ঘুরার পরিকল্পনা নিয়ে বেরিয়ে পরলাম | bear lake , nymph lake, dream lake . আর সেই সাথে ছবি তলা তো আছেই | কিন্তু যত শত সহস্র ছবিই তুলি না কেন, খোলা চোখে যা দেখি তা কেমেরায় বন্দী করা মনের অনভুতিকে অক্ষরে বন্দী করার মত এতটা দুঃসাধ্য না হলেও ততটা সহজ না আসলে | তার পরও স্মৃতিকে ধরে রাখার এই যন্ত্রটার প্রতি কৃতজ্ঞ না হয়ে পারি না | আজ এই পাহাড়ের উপর এই লেকের পারে বসে নিজেকে যতটা ভাগ্যবান মনে হচ্ছে , একদিন কে জানে এই সব ছবি দেখে দেখে হয়ত তূত্তায় মন খারাপ হবে, সুন্দর তো সব সময় এতটা নাগালের সীমায় থাকে না , ফেলে আসা সময় সব সময়েই অনেক বেশি মধুর মনে হয়, কাজেই বুদ্ধিমানের কাজ হলো বদে না থেকে আরো নতুন নতুন সুন্দর মুহুর্তের খোঁজে বেড়িয়ে পড়া | আর সেই সাথে আমার অধ হয় হাঁটার গতি আরেকটু বাড়াতে হবে, নইলে পুরোটা দেখার আগেই সুর্য ডুবে যাবে | এত উঁচুতে হেটে আমি একটু কাহিলই হয়ে গেলাম, তো এবার গাছের তলে বসে বসে পানি খাও আর লোকজন পর্যবেক্ষণ কর, এই আর কি ! একেবারে ২/৩ বচ্ছরের শিশু কাঁধে করে বাবা-মায়েরা পর্বতাভিজানে নেমে পড়েছে দেখে ভালো লাগলো, " বাড়ির বাইরে এক পা দিলেই সব শেষ " - পরিবেশে মানুষ, এসব দেখে অবাক লাগে খুব ! জীবনের অর্ধেক পার করেও নিজেকে শিশু মনে হয় :(
সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে, এবার মাটিতে নেমে আসার পালা | এসটেস এ অনেক দোকানপাট, প্রায় অধ ঘন্টা আমার বুদ্ধিমান ফোনের সাথে গবেষণা করে একটা কফিশপ বাছাই করলাম, ভিতরে ঢুকে বুঝলাম আধাঘন্টার গবেষণা নিস্ফল যায়নি, চমত্কার কফির সাথে চমত্কার দাবার বোর্ড, গুটি চেলেই সন্ধ্যাটা পার করে ফেলতাম আর কি, যদি না দোকানের মালিক দোকান বন্ধের তাগাদা না দিত :P
তো উঠতে বাধ্য হলাম, একটা মেক্সিকান দোকানে রাতের খাবার পর্ব শেষ করে এলাকাটা ঘুরে বেড়াব এখন | অনেক অনেক কিছুমিছুর দোকান, একটা দোকান কেবল আদিবাসী জিনিসের, মনে ধরে গেল, তবে জিনিসপত্রের দাম ঠিক আমার ধরার মাঝে পরে না, কিচ্ছু আর কেন গেল না | পরদিন লেক এসটেস এ বৈঠা নিয়ে নৌকা চালিয়ে নিজেই নিজেকে তাক লাগিয়ে দিলাম :) ছোট্ট একটা লেক, কিন্তু বৈতাহ হাতে নিতেই তো আমার " ওরে নীল দরিয়া " ভাব এসে গেল |
ফোর্ট কলিন্স এ যাবার পথে কী যে মেঘ দেখলাম আকাশে, রীতিমত শাসরুদ্ধকর দৃশ্য, মনে মনে বলছি, গাড়ি চলতেই থাকুক আর আমি মেঘ দেখতেই থাকি | মাটি ফুড়ে আবার দেখি কুন্ডুলী পাকিয়ে ধোঁয়া উঠছে আকাস গ্রাস করতে ! পরে দিনের শেষ বেলায় এসে জোড়া রংধনু আর হর্স-টুথ পর্বতের ফাঁকে সেই সম্মোহনী সূর্যাস্ত, আহা ! এত ঐশ্বর্য কি একদিনে গ্রহণ করা যায় ! নিজেকে ধাতস্থ করতেও তো একটু সময় লাগে !
লেখাটা শেষ করতে মন চাচ্ছে না , মনে হচ্ছে কল্পনায় পুরো যাত্রাটা আরেকবার , বার বার দেখে আসি | আবার ঘোরে ডুবে যাচ্ছি , নাহ , এই শীতের ভ্রমন পরিকল্পনাটা অতি শীঘ্রই শুরু করে ফেলতে হবে মনে হচ্ছে |
লেখাটা শেষ করতে মন চাচ্ছে না , মনে হচ্ছে কল্পনায় পুরো যাত্রাটা আরেকবার , বার বার দেখে আসি | আবার ঘোরে ডুবে যাচ্ছি , নাহ , এই শীতের ভ্রমন পরিকল্পনাটা অতি শীঘ্রই শুরু করে ফেলতে হবে মনে হচ্ছে |
(এসটেস পার্ক, ফোর্ট কলিন্স : কলোরাডো | অগাস্ট , ১০ - ১২ , ২০১১ )