মানুষের কত রকমের শখ থাকে - কেউ রাঁধতে ভালবাসে, কেউ বা ছবি তুলতে , আমার তো ছুটির দিনগুলো কাটে গান শুনে আর টিভি দেখে, অর্থাৎ যাকে বলে কিনা সম্পূর্ণ 'অসৃজনশীল' | তার পরও শখ বলে কথা | তো আমাদের ক্লাসের একজনের শখ , শখ না বলে বলা উচিত 'প্যাশন' নিজ বাড়িতে বিয়ার বানানো ! ভিরমি খেয়ে পড়ার আগে বলে রাখি আমি আমেরিকায় বসে লিখছি , কাজেই উক্ত পানীয় প্রস্তুতি এবং গলধঃকরণ উভয়ই বৈধ এবং আইনত সিদ্ধ | আমার কৌতুহলী মন সেই কর্মযজ্ঞ দেখতে চায়, পানের আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করতে পারি, কিন্তু কীভাবে হাঁড়ি - কড়াই নিয়ে মদিরা প্রস্তুত করা যায় তা দেখতে দোষ কী !
তো আমরা এশীয় আবুলরা অনেকটা শিক্ষা সফর স্টাইল এ কামেরা ট্যামেরা নিয়ে ওই বাসায় গেলাম | আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রীরা অনেক আজব কান্ডই করে, পাঁচ ছ বছর থাকতে হবে এ দেশে PhD এর জন্য, তবু আমাদের পর্যটক ভাব যায় না | যাই দেখি ছবি তুলতে মন চায় | পরবাসে যাই দেখি , মন চায় বন্ধুদের এক্ষনি ডেকে দেখাই , সেই উপায় তো নেই, কাজেই ছবি তোলাই ভরসা |
কোনো এক 'শীত যাই যাই , বসন্ত আসি আসি ' বিকেলে আমরা যথারীতি সেই ডেরায় উপস্থিত, মনে অপার কৌতুহল | গিয়ে দেখি এক প্রকান্ড এক পাত্রে পানি গরম করা হচ্ছে | পানি গরম হতে থাকুক, এই ফাঁকে আমি উপকরণের ছবি তুলতে লেগে গেলাম | মোটামুটি একটা কেমিস্ট্রি ল্যাব বলা যায় | আপেক্ষিক গুরুত্ব পরিমাপক যন্ত্র, থার্মোমিটার , সাইফন টিউব , ভর পরিমাপক যন্ত্র আর অধ ডজন টেস্ট টিউব - তাতে বিভিন্ন প্রজাতির ইস্ট [ লেবেল পড়ে বুঝলাম ]- একেকটা একেক 'স্বাদের ' জন্য | পানির তাপমাত্রা ১৫৫ F হলে তাতে কিছু একটা মেশানো হলো. মানে একটা পাতলা কাপড়ে 'মলত ' পুতলি করে তা গরম পানিতে ঢেলে দেব হলো | ৩০ মিনিট পর পানির রং হয়ে গেল খয়েরি . অনেকটা গুড় মেশানো পানির মত, আর ঘরময় হরলিক্স টাইপ গন্ধ . যেহেতু এটা এখনো মদ না কাজেই আমি চেখে দেখতে পারি :)
এবার পানি থেকে সেই পুতুলি সরিয়ে ফেলা হলো | নতুন উপকরণ মিশ্রনের পালা | মিষ্টি পানিকে তিক্ত করা হবে | হপ নামক একটা ভেষজ পদার্থ মেশানো হলো, যাতে অতি বিটকেলে একটা গন্ধ মনে হলো আমার কাছে | কোনো গাছের পাতা কিংবা বাকল হবে | তো মেশানোর পর ? আবার কি ? সেই 'দিলাম ঘুটা' টিপে বেপার | ঘুটাঘুতির পর সেই তরল পদার্থ কে তিক্ত-মিষ্ট স্বাদ লাভ করার কথা | নির্দিষ্ট সময় পর চুলা থেকে ওই বিশাল পত্র নামানো হলো, এবার একে ঠান্ডা করতে হবে | ঠান্ডা করে মিশ্রন একটা জীবানুহীন পাত্রে ঢালতে দেখলাম | ফেনাময় একটা তরল | কিন্তু এটাও নাকি মদিরা নয়, ও হা, তা কি করে হবে , এখনো তো ' গাঁজন ' হয়নি :) এবার ইস্ট মেশানো হবে , এই ইস্ট বিক্রিয়া করে কিছু একটা করবে, তার পর ২/৩ সপ্তাহ পর তৈরি হবে সেই আকাঙ্ক্ষিত পানীয় |
কিন্তু নিষ্ঠা বলে তো একটা বেপার আছে | শুধু ঢাল্লুম আর মেশালুম আর হয়ে গেল, তাতো না | আরো কত বৈজ্ঞানিক বেপার আছে ! তো সেই তরলের আপেক্ষিক গুরুত্ব নিরুপন করা হবে , সঠিক মাত্রায় না হলে তো স্বাদ ঠিক হবে না | এবার পাঠ নেয়া হলো | কত টুকু তরলে কত টুকু পানি মেশাতে হবে সেটা হিসাব করা হলো | অবশেষে সঠিক মাত্রার দ্রবণ পাওয়া গেল যার আপেক্ষিক গুরুত্ব যথার্থ | লিখছি আর ভাবছি যে কলেজে কেমিস্ট্রি এর রিপোর্ট কিভাবে লিখতাম , "এবার টেস্ট টিউব এ দ্রবণ নেই , তাপমাত্রা ... না হওয়া পর্যন্ত তাপ দেই ..." কত কথা মনে পরে যাচ্ছে |
তো আমরা এশীয় আবুলরা অনেকটা শিক্ষা সফর স্টাইল এ কামেরা ট্যামেরা নিয়ে ওই বাসায় গেলাম | আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রীরা অনেক আজব কান্ডই করে, পাঁচ ছ বছর থাকতে হবে এ দেশে PhD এর জন্য, তবু আমাদের পর্যটক ভাব যায় না | যাই দেখি ছবি তুলতে মন চায় | পরবাসে যাই দেখি , মন চায় বন্ধুদের এক্ষনি ডেকে দেখাই , সেই উপায় তো নেই, কাজেই ছবি তোলাই ভরসা |
কোনো এক 'শীত যাই যাই , বসন্ত আসি আসি ' বিকেলে আমরা যথারীতি সেই ডেরায় উপস্থিত, মনে অপার কৌতুহল | গিয়ে দেখি এক প্রকান্ড এক পাত্রে পানি গরম করা হচ্ছে | পানি গরম হতে থাকুক, এই ফাঁকে আমি উপকরণের ছবি তুলতে লেগে গেলাম | মোটামুটি একটা কেমিস্ট্রি ল্যাব বলা যায় | আপেক্ষিক গুরুত্ব পরিমাপক যন্ত্র, থার্মোমিটার , সাইফন টিউব , ভর পরিমাপক যন্ত্র আর অধ ডজন টেস্ট টিউব - তাতে বিভিন্ন প্রজাতির ইস্ট [ লেবেল পড়ে বুঝলাম ]- একেকটা একেক 'স্বাদের ' জন্য | পানির তাপমাত্রা ১৫৫ F হলে তাতে কিছু একটা মেশানো হলো. মানে একটা পাতলা কাপড়ে 'মলত ' পুতলি করে তা গরম পানিতে ঢেলে দেব হলো | ৩০ মিনিট পর পানির রং হয়ে গেল খয়েরি . অনেকটা গুড় মেশানো পানির মত, আর ঘরময় হরলিক্স টাইপ গন্ধ . যেহেতু এটা এখনো মদ না কাজেই আমি চেখে দেখতে পারি :)
এবার পানি থেকে সেই পুতুলি সরিয়ে ফেলা হলো | নতুন উপকরণ মিশ্রনের পালা | মিষ্টি পানিকে তিক্ত করা হবে | হপ নামক একটা ভেষজ পদার্থ মেশানো হলো, যাতে অতি বিটকেলে একটা গন্ধ মনে হলো আমার কাছে | কোনো গাছের পাতা কিংবা বাকল হবে | তো মেশানোর পর ? আবার কি ? সেই 'দিলাম ঘুটা' টিপে বেপার | ঘুটাঘুতির পর সেই তরল পদার্থ কে তিক্ত-মিষ্ট স্বাদ লাভ করার কথা | নির্দিষ্ট সময় পর চুলা থেকে ওই বিশাল পত্র নামানো হলো, এবার একে ঠান্ডা করতে হবে | ঠান্ডা করে মিশ্রন একটা জীবানুহীন পাত্রে ঢালতে দেখলাম | ফেনাময় একটা তরল | কিন্তু এটাও নাকি মদিরা নয়, ও হা, তা কি করে হবে , এখনো তো ' গাঁজন ' হয়নি :) এবার ইস্ট মেশানো হবে , এই ইস্ট বিক্রিয়া করে কিছু একটা করবে, তার পর ২/৩ সপ্তাহ পর তৈরি হবে সেই আকাঙ্ক্ষিত পানীয় |
কিন্তু নিষ্ঠা বলে তো একটা বেপার আছে | শুধু ঢাল্লুম আর মেশালুম আর হয়ে গেল, তাতো না | আরো কত বৈজ্ঞানিক বেপার আছে ! তো সেই তরলের আপেক্ষিক গুরুত্ব নিরুপন করা হবে , সঠিক মাত্রায় না হলে তো স্বাদ ঠিক হবে না | এবার পাঠ নেয়া হলো | কত টুকু তরলে কত টুকু পানি মেশাতে হবে সেটা হিসাব করা হলো | অবশেষে সঠিক মাত্রার দ্রবণ পাওয়া গেল যার আপেক্ষিক গুরুত্ব যথার্থ | লিখছি আর ভাবছি যে কলেজে কেমিস্ট্রি এর রিপোর্ট কিভাবে লিখতাম , "এবার টেস্ট টিউব এ দ্রবণ নেই , তাপমাত্রা ... না হওয়া পর্যন্ত তাপ দেই ..." কত কথা মনে পরে যাচ্ছে |